KALA BHUNA | KALA BHUNA BEEF RECIPE | কালা ভূনা
কালা ভূনা বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি বীফ ডিস। এটাকে কালো ভূনাও বলা হয়ে থাকে। এটি চট্টগ্রামের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। চট্টগ্রামের মানুষ এটাকে বিয়ের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন মেজবানী পার্টিতে সার্ভ করে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেও এই খাবারটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। ঢাকার প্রায় সকল হোটেল রেস্টুরেন্টে কালা ভূনা পাওয়া যায়। পার্টি শুরুর আগে সহজেই এই ডিসটি তৈরি করে ফেলা যায়। এই খাবারটি তৈরি হয় গরুর মাংস, টক দই, রন্ধনী মশলা, স্পেশাল গরম মশলা যার মধ্যে শাহ্ জিরা থাকতে হবে, সরিষার তেল, ভিনেগার এবং বিভিন্ন ধরনের মশলা দিয়ে। কালা ভূনা খুবই টেস্টি একটি ডিস। এর টেস্ট কিছুটা ঝাঝাল। আর তাই এটি একবার খেলে বারবার খেতে ইচ্ছে করবে। খুব সহজেই এটি আপনি তৈরি করতে পারবেন। একদম রেস্টুরেন্ট স্বাদের। কীভাবে তৈরি করবেন? দেখে নিন এর প্রস্তুত প্রণালী।
উপকরণ
▪ গরুর মাংস (হাড়সহ)-দেড় কেজি
▪ পেয়াজ-১ কাপের চার ভাগের তিনভাগ
▪ পেয়াজ বেরেসতা-আধা কাপ
▪ রসুন কুচি-১ চা চামচ
▪ লবন-প্রয়োজন মতো
▪ পোস্তদানা বাটা-আধা টেবিল চামচ
▪ আদা বাটা-২ টেবিল চামচ
▪ রশুন বাটা-দেড় টেবিল চামচ
▪ তেজপাতা-২টা
▪ শুকনা মরিচ-স্বাদ মতো
▪ টক দই-এক কাপের চারভাগের একভাগ
▪ মরিচের গুড়া-১ টেবিল চামচ
▪ হলুদের গুড়া-১ টেবিল চামচ
▪ ধনিয়ার গুড়া-১ টেবিল চামচ
▪ টালা জিরা গুড়া-১ চা চামচ
▪ কালো গোল মরিচের গুড়া-আধা চা চামচ
▪ রন্ধনী মশলা-১ চা চামচ
রন্ধনী মশলাটাকে টেলে গুড়ো করে নিতে হবে।
এই মশলাটি ঐতিহ্যবাহী কালা ভূনার একটি
প্রধান উপাদান।
▪ গরম মশলার গুড়া-১ চা চামচ।
এই মশলাটিতে শাহ জিরা থাকতে হবে।
এটি আপনি নিজে তৈরি করে নিবেন।
এই রেসিপিতেই আমি মশলাটি তৈরি
করা আপনাকে শিখিয়ে দিচ্ছি।
▪ সরিষার তেল-১ কাপ (মিক্সিং এর জন্য)
এছাড়া বাগারের জন্যও প্রয়োজন মতো সরিষার
তেল লাগবে। এটি কালা ভূনার অপর একটি
প্রধান উপাদান।
▪ ভিনেগার-দেড় টেবিল চামচ
কালা ভূনার জন্য গরম মশলা তৈরির পদ্ধতিঃ
খুবই সিম্পল। এর জন্য আপনি এলাচ, দারুচিনি, জায়ফল, যয়িত্রী আর শাহ জিরা একসাথে নিয়ে গুড়ো করে নিন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল গরম মশলা। এখান থেকে ১ চা চামচ আপনি কালা ভূনা রান্নার কাজে ব্যবহার করবেন। গরম মশলাটিতে শাহ্ জিরা অবশ্যই রাখবেন। কারন কালা ভূনা একটি মেজবানী ডিস। শাহ্ জিরা ডিসটিতে একটি মেজবানী ফ্লেভার নিয়ে আসবে। ঐতিহ্যবাহী কালা ভূনার এটিও একটি প্রধান উপাদান বলা চলে।
প্রস্তুত প্রণালী
০১। প্রথমে মাংসের সাথে উপাদানগুলোকে মিক্স করে ফেলুন। এর জন্য একটা পাত্রে মাংসটা ঢেলে দিন। সাথে যোগ করুন পেয়াজ বেরেসতা, আধা কাপ পেয়াজ কুচিঁ। বাকী আধা কাপ পেয়াজ রেখে দিতে হবে পরবর্তীতে বাগারের কাজে ব্যবহারের জন্য। এরপর যোগ করুন টক দই, পোস্তদানা বাটা, আদা বাটা, রশুন বাটা। সাথে দু’টো তেজপাতা ছিড়ে দিয়ে দিন। এবার মশলা যোগ করুন। মশলাগুলো হলো মরিচের গুড়া, হলুদের গুড়া, ধনিয়ার গুড়া, টালা জিরা, কালো গোল মরিচের গুড়া, রন্ধনী টালা গুড়া এবং আপনার নিজের তৈরি করা গরম মশলার গুড়া। সবশেষে নিন এক কাপ পরিমান সরিষার তেল এবং স্বাদ মতো লবন।
যে সকল উপাদান থেকে গেল তা হলো-বাগারের জন্য পেয়াজ কুচি, রশুন কুচি, শুকনা মরিচ ও সরিষার তেল। আরো থেকে গেল ভিনেগার। মাংসটা চুলায় বসানোর এক ঘন্টা পর ভিনেগারটা দিতে হবে।
তাহলে যেগুলো আপনি একসাথে নিলেন সেগুলোকে এখন ভালভাবে মাখান। প্রায় ৫ মিনিট ধরে মাখান। খুব ভালভাবে মাখাতে হবে।
০২। উপকরণগুলো মাখানো হয়ে গেলে ২ কাপ পরিমান পানি ঢেলে দিন। এবার এটাকে আপনি চুলায় বসিয়ে দিন এবং ঢেকে দিন। চুলার আঁচটা থাকবে মিডিয়াম থেকে একটু কম। ১ ঘন্টা মাংসটা চুলায় থাকবে। মাঝে মাঝে ঢাকনাটা তুলে একটু নেড়ে দিতে হবে। নেড়ে দেয়ার কাজটা ২০ মিনিট পর পর করুন। নয়তো মাংসটা তলায় লেগে যাবে। মাংসটা যাতে তলায় লেগে না যায় সেজন্যই কম আচেঁ রান্না করতে হবে।
০৩। এক ঘন্ট হয়ে গেলে এবার আপনি ভিনেগারটা দিয়ে দিন। ভিনেগার দিবেন দেড় টেবিল চামচ। একটু নেড়ে দিয়ে আবারো এক ঘন্টার জন্য ঢেকে দিন। এবার চুলার আঁচটা থাকবে খুবই কম। তবে মাংসটা যাতে তলায় লেগে না যায় সেজন্য আগের মতোই মাঝে মাঝে নেড়ে দিতে হবে।
০৪। আরো এক ঘন্টা শেষ হলে দেখবেন মাংসটা ঘন হয়ে গেছে। অনেক ঝোল কমে গেছে। এবার আপনি বাগার দিবেন। মাংসটা থেকে বের হওয়া তেলের পরিমান বেশি হলে বাগারের জন্য অল্প করে সরিষার তেল একটি প্যানে নিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। এর উপর শুকনা মরিচগুলো ছিয়ে দিয়ে দিন। শুকনা মরিচ নিবেন স্বাদ মতো। যে যেমন ঝাল খেতে ইচ্ছুক সে অনুযায়ী নিতে হবে। এরপর যোগ করুন রশুন কুচি আর পেয়াজ কুচি। পেয়াজটা বাদামী কালার না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।
০৫। পেয়াজটা বাদামী কালার হলে আপনি এটাকে মাংসের উপর ঢেলে দিন। এখন আপনি মিডিয়াম থেকে একটু কম আচেঁ ২০ থেকে ৩০ মিনিট নাড়তে থাকুন। এভাবে নাড়তে নাড়তেই তৈরি হয়ে যাবে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী কালা ভূনা। খুবই বিখ্যাত একটি ডিস। দারুন টেস্টি। কিছুটা ঝাঝাল টেস্টের জন্যই হয়তো কালা ভূনা খেতে এতো মজা লাগে।
০৬। রান্না শেষ। কালা ভূনা ইজ রেডি টু সার্ভ। থ্যাংক ইউ ফর গিভিং আস ইন্টারেস্ট। ইউর ইন্টারেস্ট ইজ আওয়ার স্পিরিটস।
০৭। রেসিপিটি তৈরির আগে ভিডিওটি দেখে নিন। টেক্সট পড়ে, ভিডিও দেখে তৈরি করে ফেলুন ঐতিহ্যবাহী মজাদার বিফ রেসিপি কালা ভূনা।